RefugeeOthers World 

পাসপোর্ট জরুরি নয় শরণার্থীদের নাগরিকত্বে

আমার বাংলা অনলাইন নিউজ ডেস্ক : শরণার্থীদের নাগরিকত্ব প্রদানে ধর্ম-পরিচয়ের ভিত্তিতে ফারাক করার নতুন আইন নিয়ে তোলপাড় দেশজুড়ে। এর মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টের এক রায়ে শোরগোলও। জানা যায়, পাসপোর্টের মতো নথি না-থাকলেও ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদনে কোনও শরণার্থীর বাধা নেই বলে জানিয়েছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভ্ট্টাচার্য। বিভিন্ন রকম নথি জোগাড়ে আতঙ্কিত অনেকেই এখন উদ্বেগে। এই সময়েই ১৯৫৫ সালের মূল নাগরিকত্ব আইনের ৫(১) (সি) ধারার ব্যাখ্যায় বিচারপতি জানিয়েছেন, শরণার্থী হয়ে আসা কারও যদি পরিস্থিতি-সাপেক্ষে পাসপোর্টের মতো নথি না থাকে, তা হলেও পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতেই পারেন। প্রসঙ্গত, ১৯৭৩ সালে মাত্র ৫ বছর বয়সে প্রাণভয়ে এ দেশে এসেছিলেন বিসমিল্লা খান। পাখতুন বিসমিল্লার জন্মভূমি। পরে আফগানিস্তান-পাকিস্তানে ভাগাভাগি হয়েছে। আবার কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া বিসমিল্লা এখানেরই একজনকে বিয়ে করে সংসারী হয়েছেন। এক কন্যা-সন্তানেরও বাবা। কয়েক বছর আগে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে গিয়ে দেখেছেন, পাসপোর্টের তথ্য এবং নথির প্রতিলিপি আপলোড না-করা হলে অফ লাইনের বদলে চালু অনলাইন ব্যবস্থায় আবেদনই জমা করা যাচ্ছে না। এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিসমিল্লা। এক দফা মামলা খারিজ হলেও তাঁর দ্বিতীয় মামলায় বিচারপতি ভট্টাচার্য ২৪ ফেব্রুয়ারির রায়ে নাগরিকত্ব প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের ভূমিকা আইন-বহির্ভূত জানিয়ে বিসমিল্লাকে পাসপোর্ট ছাড়াই নাগরিকত্বের জন্য আবেদনে অনুমতি দিয়েছেন। উল্লেখ করা যায়, ১৯৫৫ সালের আইনের ৫(১) (সি) ধারায় বলা হয়েছে, ভারতীয়কে বিয়ে করে এ দেশে ৭ বছর ধরে বসবাসকারী নাগরিকত্ব পেতে পারেন। ঠিক ৫(১)(এ) ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ভারতে জন্মালে এবং তারপর থেকে ৭ বছর বসবাসের পর তিনিও হতে পারেন নাগরিকত্বের দাবিদার। এই ৫ ধারার একাধিক উপধারায় ধর্ম-নিরপেক্ষভাবেই শরণার্থী ও তাদের সন্ততির নাগরিকত্বের অধিকার স্পষ্ট। প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৯ জানুয়ারি সুপ্রিমকোর্ট অরুণাচলে বসবাসকারী বাংলাদেশ থেকে আসা ৬৪ হাজার চাকমা-হাজং শরণার্থীকে নাগরিকত্ব প্রদানের নির্দেশ দিয়েছিল।

Related posts

Leave a Comment