কামারহাটিতে আগুনে ভস্মীভূত ১২টি বাড়ি
আমার বাংলা অনলাইন নিউজ ডেস্ক : গতকাল সকাল ১০টায় আগুন লেগে কামারহাটি পুরসভায় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর প্রান্তিক নগরের বস্তির ১২টি বাড়ি ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, দমকলের ৩টি ইঞ্জিন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দমকল ও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। আগুনের তাপে ১০ জন অসুস্থ হয়েছেন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছে কামারহাটি পুরসভা। উত্তর প্রান্তিক নগরের বস্তিতে একটি বাড়িতে আগুন লেগেছিল। নিমেষেই এই আগুন পাশের বাড়িগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে। দরমার বেড়া দেওয়া বাড়ি হওয়ায় আগুন দাউ-দাউ করে জ্বলতে থাকে। তখনই ৪টে বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এরফলে আগুন ভয়াবহ আকার নেয়। এলাকায় প্রবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নেভাতে উদ্যোগী হয়। এলাকার একটি কারখানার কর্মীরাও এগিয়ে আসেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রথমে কামারহাটি দমকল কেন্দ্র থেকে একটি ইঞ্জিন পৌঁছায়, তারপর বরানগর ও পানিহাটি থেকে দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। দমকলের ৩টে ইঞ্জিন এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, বস্তির ক্ষতিগ্রস্তরা বেশিরভাগই দিনমজুর।তারা সকলেই রাজমিস্ত্রি, ভ্যানচালক ও শ্রমিকের কাজের সঙ্গে যুক্ত। বর্তমানে অসহায় হয়ে পড়েছেন পরিবারগুলি। উল্লেখ্য, ১২টি পরিবারের প্রায় ৭০ জন মানুষ কার্যত খোলা আকাশের নিচে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে গরিফা মল্লিক জানিয়েছেন, একটি বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গিয়েছে। পরক্ষণেই দাউ-দাউ শিখা গিলে ফেলে আমার বাড়িও। আগুন থেকে বাঁচতে সকলেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই। এলাকার বাসিন্দারা হাত লাগান। আমার বাড়িতে থাকা সবকিছু ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। একবেলা রান্না করার মত জিনিসপত্রও বাঁচাতে পারিনি। আরেক ক্ষতিগ্রস্ত শান্তি ঘোষ জানিয়েছেন, আগুনের লেলিহান শিখায় আমার বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। ঘরের মধ্যে থাকা ছোট ছোট তরুণ-তরুণীদের কোনও ক্রমে বাইরে নিয়ে আসা হয়েছে। ঘরে থাকা টাকা-পয়সা বা জামা-কাপড় কিছুই বাইরে আনতে পারিনি। তবে পুরসভা থেকে আমাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে। দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও করা করেছে। পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, প্রত্যেক ক্ষতিগ্রস্তর পাশে পুরসভা রয়েছে। ইতিমধ্যেই ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা পুরসভার স্বাস্থ্যবিভাগের পুর পারিষদ বিমল সাহা জানিয়েছেন, মোট ১২টি বাড়ি ভস্মীভূত হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। আবার পুরসভা ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। যতদিন না বাড়ি তৈরি হচ্ছে, ততদিন ওদের দু-বেলা খাবারের ব্যবস্থা পুরসভার উদ্যোগে করা হবে। যাঁরা আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও পুরসভা থেকে করা হবে।