প্রাণায়ামে শ্বাসবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে দীর্ঘায়ু পাওয়া সম্ভব
আমার বাংলা অনলাইন নিউজ ডেস্ক : আধুনিক চিকিৎসক বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, একজন পরিশ্রমী অ্যাথলিটের সাধারণ মানুষের তুলনায় পালস রেট কম থাকে। সাধারণ মানুষের তুলনায় ক্রীড়াবিদরা সুস্থ-সবল জীবনযাপনও করে থাকেন। পালস রেট কমানোর যুক্তিকে কোনওমতেই ছোট করা যায় না। আবার যোগশাস্ত্র জানানো হয়েছে, প্রাণায়ামের মাধ্যমে শ্বাসবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে দীর্ঘায়ু পাওয়া সম্ভব। এমনকী প্রাণায়াম করলে শারীরিক বিভিন্ন জরুরি উপকারও পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রাণায়ামের প্রথম পাঠ নিয়ে আলোকপাত করা হল। যোগশাস্ত্র মতে জানানো হয়েছে, প্রাণায়ামের ৩টি অংশ রয়েছে। যেমন- শ্বাস নেওয়া, শ্বাস বন্ধ রাখা এবং শ্বাস ছাড়া। শ্বাস নেওয়াকে বলা হয় পূরক। শ্বাস বন্ধ করে রাখার অবস্থাকে বলে কুম্ভক। শ্বাস ছেড়ে দেওয়াকে বলে রেচক। আবার যোগীরা বলে থাকেন, সাধারণ মানুষের কুম্ভক না করাই ভাল। শ্বাস বন্ধ রাখার কোনও প্রয়োজন নেই। তবে সুস্থ থাকার জন্য শ্বাস নেওয়া এবং ছাড়ার মাধ্যমেই প্রাণায়াম করা স্বাস্থ্যসম্মত। অন্যদিকে সহজ-সরল প্রাণায়াম রয়েছে। প্রাণায়ামের অনেক প্রকার ভেদও। সব ধরনের প্রাণায়াম প্রতিটি মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়, তা উপকারীও নয়। সাধারণ মানুষের কথা ভেবে ৮টি লঘু প্রাণায়ামের কথা বলা হয়েছে। প্রাণায়ামগুলি হল- সূর্যভেদ প্রাণায়াম, উজ্জয়ী প্রাণায়াম, সিৎকারী প্রাণায়াম, শীতলি প্রাণায়াম, ভস্ত্রিকা প্রাণায়াম, ভ্রামরী প্রাণায়াম, মুর্ছা প্রাণায়াম ও প্লাবনী প্রাণায়াম। এই প্রাণায়ামগুলি সম্বন্ধে বিশদে আলোকপাত করা যেতে পারে। যেমন- সূর্যভেদ প্রাণায়াম। এক্ষেত্রে ডান নাক দিয়ে শ্বাস নিলে বা ছাড়লে পিঙ্গলা নাড়ি বা সূর্য নাড়ি দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া হচ্ছে বলা হয়। আবার বাম নাকে শ্বাস নেওয়া-ছাড়াকে ইরা নাড়ি দিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া বলে। সূর্যভেদ প্রাণায়াম করার জন্য প্রথমে পদ্মাসনে বসতে হবে। কোমরে বা পিঠে ব্যথা থাকলে এক্ষেত্রে পিঠ সোজা রেখে চেয়ারে পা ঝুলিয়ে বসা যেতে পারে। ডান হাতকে উপরে তুলে কনিষ্ঠা এবং অনানিকা দিয়ে বাম নাক বন্ধ করতে হবে। এরপর ডান নাক দিয়ে আস্তে-আস্তে বুক ভরে শ্বাস নিতে হবে। শ্বাস নেওয়া শেষ হলে বুড়ো আঙুল দিয়ে ডান নাক বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি বাম নাক থেকে কনিষ্ঠা ও অনানিকা সরিয়ে আনতে হবে। তারপর বাম নাক দিয়ে আস্তে-আস্তে পুরো শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। এই পদ্ধতি মেনে পুনরায় শ্বাস নেওয়া-ছাড়া করতে হবে। প্রাথমিকভাবে ১ মিনিট করলেই যথেষ্ট। কিছুদিন করার পর অভ্যেস হয়ে গেলে সময় বাড়াতে হবে। এর উপকারিতা হল- নিয়মিত এই প্রাণায়াম অভ্যেস করলে হজম শক্তি বাড়ে, খিদেও বেড়ে যায়। বাতের নানা উপসর্গও কমে। সর্দি-কাশি কম হয়। কৃমির সমস্যা থাকলে কমবে। শরীরের অতিরিক্ত মেদও ঝরে যায়। সাইনাস ও মাইগ্রেন থাকলে তাও কম হয়।