নির্জন চিড়িয়াখানায় কেবল পাখিদের কলতান
আমার বাংলা অনলাইন নিউজ ডেস্ক : দর্শকহীন চিড়িয়াখানা। এখন শুধুই সেখানে পাখিদের কিচিরমিচির। ভিড়ে অভ্যস্ত চিড়িয়াখানার এখন এই হাল। লকডাউন সর্বত্র। চিড়িয়াখানার পশু-পক্ষীরা বুঝতে পারছে না ঠিক কি অবস্থা। করোনা সংক্রমণ এড়াতে গত সপ্তাহ থেকে প্রাথমিকভাবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চিড়িয়াখানা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের পরে সেই সময়সীমা আরও বাড়িয়ে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে চিড়িয়াখানার এই ফাঁকা আবহ পশু-পাখিদের উপরে কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে প্রথমে সংশয়ে ছিলেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত জানিয়েছেন, যতদিন গড়িয়েছে তত বোঝা গিয়েছে, দর্শক না থাকায় বেশ খুশি চিড়িয়াখানার বেশিরভাগ সদস্যই। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রের খবর, যে সমস্ত প্রাণী ভিড় পছন্দ করে না, তারা এখন ইচ্ছেমতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। অনেক সময়ে বেড়ার একদম কাছে চলে আসছে। পাখিদের ডাকও বেড়ে গিয়েছে ফাঁকা চিড়িয়াখানায়। অন্যদিকে দর্শকদের না দেখে মন খারাপ শিম্পাঞ্জিদের। এ বিষয়ে পশু চিকিৎসকদের বক্তব্য, শিম্পাঞ্জি সাধারণত মানুষের সংস্পর্শে খুব একটা বিরক্ত হয় না। এতদিনে ওদের সেটাই অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল। দর্শকদের দেখলেই বিভিন্ন রকম কসরত শুরু করে শিম্পাঞ্জিরা। সে সব এখন নেই। তাই ওর মন খারাপ। উল্লেখ্য, লকডাউনের জন্য চিড়িয়াখানার পশু-পাখিদের খাবার সরবরাহ এবং সেই খাবার সময় মতো তাদের দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়ছে। এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিদিনের মতো নির্দিষ্ট সংস্থাই নিয়মিত তাদের খাবারের জোগান দিয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে জানা গিয়েছে, মাছ, মাংস, ডিম ও ফল-সহ মোট ৭টি বিভাগে পশু-পাখিদের জন্য খাবার আসে। সেই বিভাগেরও আবার অনেক ভাগ। মাংসের মধ্যে মোষের মাংস, গরুর লিভার, খাসির মাংস রয়েছে। আবার কলা, কমলালেবু ও খেজুর-সহ ফল আসে কমপক্ষে ১৬ রকমের। বিন, আলু, বরবটি ও পেঁয়াজ-সহ মোট ১৬ রকমের আনাজও আসে রোজ। আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিসকুমার সামন্ত জানালেন, এত বড় সংসারে একজনের একরকম পছন্দ, খাওয়া-দাওয়ার ধরন। সবটাই মাথায় রাখতে হয়। খাবারের সরবরাহ নিয়ে কোনও চিন্তা নেই।